মার্চ বিপ্লব : প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে মধ্যযুগীয় জারতন্ত্র, সামন্ত্রতান্ত্রিক শোষণ, কৃষক ও শ্রমিকদের দুরবস্থা, অর্থনৈতিক সংকট প্রভৃতি বিষয়গুলি রাশিয়ায় এক অস্থির পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।
মার্চ মাসের বিপ্লব
রাশিয়ার অস্থির পরিস্থিতিতে ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসে দেশে জার- বিরোধী বিপ্লব ছড়িয়ে পড়ে।
জনমত গঠন
রাশিয়ার যুদ্ধবিরতি, কৃষকদের মধ্যে ভূমিবণ্টন, শ্রমিকদের অবস্থার উন্নতি প্রভৃতি দাবিতে বলশেভিক দল রাশিয়ার সর্বত্র প্রচার চালিয়ে জনমত গঠন করতে থাকে। তাদের বক্তব্য ‘প্রাভদা’ নামে এক দলীয় পত্রিকার মাধ্যমে জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
আন্দোলনের সূত্রপাত
বলশেভিক দলের নেতৃত্বে রাশিয়ার বহু স্থানে শ্রমিক ধর্মঘট শুরু হয়। ৮ মার্চ (১৯১৭ খ্রি.) থেকে পেট্রোগ্র্যাড (সেন্ট পিটার্সবার্গ) শহরে প্রায় ৮০ হাজার শ্রমিক খাদ্যের দাবিতে ধর্মঘট, মিছিল ও অবরোধে অংশ নেয়।
বিদ্রোহের তীব্রতা
বিদ্রোহ শীঘ্রই ব্যাপক আকার ধারণ করে। বলশেভিকদের নেতৃত্বে বিদ্রোহীরা থানা ও আদালতগুলিতে আগুন লাগিয়ে দেয় এবং অস্ত্রাগার লুণ্ঠন করে। জারের সৈন্যদের একাংশ ১২ মার্চ বিদ্রোহীদের সঙ্গে যোগ দেয়। বিদ্রোহীরা জারের মন্ত্রী ও সেনাপতিদের বন্দি করে এবং রাজধানী পেট্রোগ্র্যাড দখল করে পেট্রোগ্র্যাড ‘সোভিয়েত’ গঠন করে।
জারের পদত্যাগ
বিদ্রোহের ব্যাপকতায় জার দ্বিতীয় নিকোলাস পদত্যাগ (১৩ মার্চ, ১৯১৭ খ্রি.) করতে বাধ্য হন। প্রিন্স জর্জ লুভ-এর নেতৃত্বে রাশিয়ায় একটি অস্থায়ী প্রজাতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়।
উপসংহার
১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে রাশিয়ায় বলশেভিক বিপ্লবের চূড়ান্ত পর্যায়ের পূর্বে মার্চ বিপ্লব ছিল ব্যাপক গণ আন্দোলন। আন্দোলনের চাপে জার পদত্যাগ করলে ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর মাসে রাশিয়া সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
====>>> রাশিয়ার ভূমিদাস প্রথার তীব্রতা