দেশীয় ভাষা সংবাদপত্র : ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দের ১৪ মার্চ ভারতের ভাইসরয় লর্ড লিটন দেশীয় ভাষা সংবাদপত্র আইন বা ভার্নাকুলার প্রেস অ্যাক্ট প্রবর্তন করেন। দেশীয় ভাষায় প্রকাশিত সংবাদপত্রগুলি সরকারি নীতির সমালোচনা করছিল বলে সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধ করার জন্য এই আইন জারি করা হয়। একে শ্বাসরোধক আইন বলেও চিহ্নিত করা হয়।
মুদ্রণ আইন বা দেশীয় ভাষা সংবাদপত্র আইন
আইনের বিষয়বস্তু
ভার্নাকুলার প্রেস অ্যাক্ট-এর বিষয় হল- দেশীয় ভাষায় প্রকাশিত সংবাদপত্রে সরকারের স্বার্থবিরোধী কোনো লেখা প্রকাশ করলে এই পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক শাস্তি পাবে এবং ছাপাখানা বাজেয়াপ্ত করা হবে।
ভার্নাকুলার প্রেস অ্যাক্ট প্রবর্তনের কারণ
তৎকালীন সংবাদপত্রগুলি লর্ড লিটনের শাসনকালে ভারতের আর্থিক দুর্গতি, দাক্ষিণাত্যের ভয়াবহ দুর্ভিক্ষে জনগণের দুর্দশা, দুর্ভিক্ষ তহবিলের অর্থ আফগানিস্তানের যুদ্ধে ব্যয়, মহারানি ভিক্টোরিয়াকে ‘ভারতেশ্বরী’ খেতাব প্রদানে প্রচুর অর্থব্যয় প্রভৃতির তীব্র সমালোচনা করেছিল। এমতাবস্থায় লর্ড লিটন সংবাদপত্রগুলির কণ্ঠরোধ করার জন্য এই আইন প্রবর্তন করেন।
আইনের প্রয়োগ
এই আইনের ফলে সোমপ্রকাশ, সহচর প্রভৃতি পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ হয়। ইংরেজি-বাংলা দ্বিভাষী সাপ্তাহিক অমৃতবাজার পত্রিকা-র বাংলা প্রকাশনাও বন্ধ হয়ে যায়।
====>>> ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে রাশিয়াতে ‘মার্চ বিপ্লব’
ভারতীয়দের প্রতিক্রিয়া
এই আইনের বিরুদ্ধে বহু প্রতিবাদসভা অনুষ্ঠিত হয়। সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ভারতসভা’ এর সক্রিয় বিরোধিতা করে। ভারতসভার উদ্যোগে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে প্রতিবাদপত্র পাঠানো হয়।
পরিশেষে বলা যায়, ভার্নাকুলার প্রেস অ্যাক্ট ভারতের জাতীয় জাগরণে বিশেষ সহায়ক হয়। ১৮৮১ খ্রিস্টাব্দের ২৮ জানুয়ারি লর্ড রিপন এই আইন প্রত্যাহার করে নেন।